1a) চট্টগ্রামের ইতিবৃত্ত- চট্টগ্রামের স্বকীয়তার পঠভূমী
চট্টগ্রামের স্বকীয়তার পঠভূমী
প্রশান্তিময় সবুজে ঘেরা পাহাড়, মন ভুলানো সাগরের ঢেও ভাঙ্গা রব, অচেনা বুলির মধুময় আলাপন, ব্যস্ত ওঁ বিশৃঙ্খল শহরে পাখির কলতান দেখে বুঝতে কষ্ট হয় পদ্মা, মেঘনা ওঁ যমুনা নদীর তীরবর্তি প্লাবন ভূমীর বাংলাদেশের এটা কোন এক জেলা। সেই বেতিক্রমি ভাবটা এই জেলার মানুষের আকৃতি ওঁ চেহারায়ওঁ পরিলক্ষিত – একেক জনের মুখের গঠন ওঁ মুখভঙ্গি ব্যচিত্রময়। শারীরিক বিশিষ্ট ও চালচলনের এই ভিন্নতা কম বেশি বাংলাদেশের সব অঞ্চলে পরিলক্ষিত। চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের মানুষের মধ্যে এই বিচিত্রতার মাত্রাটা একটু বেশী। সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম কিছু অমিল থাকলেও অন্যান্য অঞ্চলের সাথে চট্টগ্রামের অনেক মিল।
বাংলাদেশের আর দশটা শহরের মত চট্টগ্রাম শহরও আগুছালো ও বিশৃশঙ্কল। বিশৃশঙ্কলতা সবদিকে – রাস্তা-ঘাটে ও হাটা-চলায়। তার বাইরেও আছে ধন-সম্পদের বৈশম্যতা, আছে অগোছালো রাস্তায় নিরাপত্তা ও দুর্ঘটনার ঝুঁকি; লেইন, চিহ্ন ওঁ সতর্ক সঙ্কেত বিহীন রাস্তা ঘাট। প্রকৃতীর এত সুন্দর শহরে মানুষ সৃষ্ট এই বিশৃশঙ্কলা বেমানান। যথেচ্ছাচারী ও নীতিহীনতা দেখলে মনে হয় আমরা বাংলাদেশেই আছি। পাহাড়, সমুন্দর, ব্যবসা বাণিজ্যের চট্টগ্রাম শহরে আছি।
পাকিস্তান আমল থেকে ধীরে ধীরে চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অন্যান্য অঞ্চলের সাথে অংশভুক্ত হতে থাকে, এই অঞ্চলের সাংস্কৃতিক স্বকীয়তা ধীরে ধীরে বিলীন হতে চলছে। তবে এখনো, অনেক দিক থেকে চট্টগ্রাম বাংলাদেশে অন্যান্য জেলা থেকে ব্যতিক্রম। ব্যতিক্রমতা পরিলক্ষিত মানুষের কথায়, পেশায়, চাল চলনে এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে চেহারায়। এই স্বকীয়তার উৎস খুঁজতে গিয়ে হাজার বছরের ইতিহাসের আলোয় বর্তমানকে বুঝার প্রয়াস নিতে হবে।
হাজার বছরের চট্টগ্রামের ইতিহাস জানার আগ্রহ আর অপরদিকে আমাদের আদিপুরুষদের লিখিত দলিল লেখার কিছুটা অনাগ্রহ আর অপারগতার কারণে নিখুঁত ও নির্ভুলভাবে আমাদের পূর্বপুরুষদের ইতিবৃত্য জানা দুরহ হলেও অসম্ভব নয়। চট্টগ্রামের মানুষের মরফলজিকেল বৈশিষ্ট (বাহ্যিক শারীরিক বিশিষ্ট), সাংস্কৃতিক স্বতন্ত্রতা, ধর্মীয় ধাঁচ ও ব্যবহার, সামাজিক আচারানুষ্টান, মোঘল-ইংরেজ আমলের লিখিত দলিল দেখে আমাদের চট্টগ্রামের গল্প ও ইতিহাস জানার এই দুরহ প্রয়াসকে বাস্তবে রূপ দেওয়া হল।
Author: Nazim Uddin, Date: 10.02.2020.
Citation: নাজিম উদ্দীন, (২০২০) ‘চট্টগ্রামের স্বকীয়তার পঠভূমী’ ঊদ্দীন-উইসডম, ১০ ফেব্রুয়ারী, পাওয়া যাবে https://uddins-wisdom.com/চট্টগ্রামের-ইতিবৃত্ত, ব্যবহারের তারিখ- দিন/মাস/বছর